‘ভয়ানক ও শ্বাসরুদ্ধকর’—জ্বলন্ত উড়োজাহাজ থেকে পালানোর বর্ণনা দিলেন যাত্রীরা
‘ভয়ানক ও শ্বাসরুদ্ধকর’—জ্বলন্ত উড়োজাহাজ থেকে পালানোর বর্ণনা দিলেন যাত্রীরা..............
‘এটি ছিল সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ার মতো, আতঙ্ক সৃষ্টিকারী ও ভয়ানক ঘটনা।’ আগুন ধরে যাওয়ার পর আমেরিকান এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ থেকে পালিয়ে বেঁচে ফেরা যাত্রীদের একজন এভাবেই জানাচ্ছিলেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমান পরিবহন সংস্থাটির ওই উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কলোরাডোয় জরুরি অবতরণ করতে বাধ্য হয়।
উড়োজাহাজটিতে ১৭২ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁদের ডালাস যাওয়ার কথা ছিল। পথিমধ্যে এটির ইঞ্জিনে ত্রুটি দেখা দেয়। জরুরি অবতরণের পর উড়োজাহাজটিতে আগুন লাগে। তখন আতঙ্কিত যাত্রীদের অনেকে এটির ডানার ওপর গিয়ে দাঁড়ান। কলোরাডোর রাজধানী ডেনভারের বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে থাকা উড়োজাহাজটি থেকে তখন এ যাত্রীদের ঘিরে ঘন ধোঁয়া বের হচ্ছিল।
বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা জানান, এ ঘটনায় উড়োজাহাজটি থেকে বেঁচে ফিরতে সক্ষম হয়েছেন আরোহীদের সবাই। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ৬ জন ক্রু সদস্যও। সামান্য আহত হওয়ায় ১২ যাত্রীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এই যাত্রীদের একজন মাইকেল উডস। উড়োজাহাজটির উড্ডয়নকালে কীভাবে সবকিছু স্বাভাবিক ছিল, সেই কথা জানাচ্ছিলেন তিনি। বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজকে উডস বলেন, আকাশে ওড়ার আগপর্যন্ত উড়োজাহাজের ইঞ্জিনগুলোর একটি থেকে বিকট শব্দ বেরিয়ে আসার বিষয়টি তিনি টের পাননি।
ইউএস ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) নিশ্চিত করেছে, ক্রু সদস্যরা ইঞ্জিন থেকে প্রতিধ্বনির শব্দ বেরিয়ে আসার তথ্য জানানোর পর স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটের দিকে উড়োজাহাজটি ডেনভারের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।
atOptions = { 'key' : '3cd88005d513bb251856c1d5b7b07d22', 'format' : 'iframe', 'height' : 60, 'width' : 468, 'params' : {} };
তবে উড়োজাহাজটিকে জরুরি অবতরণ করানোর পর যাত্রীরা শিগগিরই বুঝতে পারেন, তাঁরা তখনো মোটেও নিরাপদ নন।
উডস নামের ওই নারী যাত্রী বলেন, ‘সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু হঠাৎ কেবিন ধোঁয়ায় ভরে যায়।’ কলোরাডোয় একটা বাণিজ্য মেলায় অংশ নিয়ে উড়োজাহাজটিতে করে বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি।
উডস উড়োজাহাজের সম্মুখভাগের আসনের যাত্রী ছিলেন। এটি জরুরি অবতরণ করার পর কেবিন থেকে হাতে গোনা যে কয়েকজন হেঁটে নিচে নামতে সক্ষম হয়েছিলেন, তিনি তাঁদের একজন।
ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন উড়োজাহাজ থেকে অন্য যাত্রীদের সহজে পালিয়ে আসাটা সহজ ছিল না। তাঁরা অনেকে এটির ডানায় আশ্রয় নেন। তাঁদের ডানায় আশ্রয় নেওয়ার কিছু ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
কেবিন ধোঁয়ায় ঢেকে গেলে প্রাণ বাঁচাতে অন্যদের মতো ১০০৬ ফ্লাইটের ডানায় আশ্রয় নেন ইংরিড হিবিটও। স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে উড়োজাহাজে উঠেছিলেন তিনি। উদ্ধার হওয়ার পর মাটিতে নেমে তিনি স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে আবার একত্র হন।
সিবিএসকে এই নারী বলেন, ‘(আপনি দেখে থাকবেন) জানালা দিয়ে আগুনের শিখা বের হচ্ছে ও সেগুলো একরকম গলে পড়ছে।’ উড়োজাহাজটি থেকে বেরিয়ে আসা একটা কঠিন কাজ ছিল বলে জানান তিনি।
হিবিটের কথায়, ‘(আতঙ্কে) আমি যেন কাঁপছিলাম, স্থির থাকতে পারছিলাম না।’
হিবিট জানান, উদ্বেগ-আতঙ্কে তাঁর জ্বর এসে গিয়েছিল। কেবিনের পৃথক জায়গায় তিনি ও তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা বসেছিলেন। আগুন লাগার পর তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে পারছিলেন না। শুধু মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়ে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছিলেন।
.png)
No comments